একুশে টিভির ২৪ বছরে পদার্পণ
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দাবিয়ে রাখা যাবেনা
প্রকাশিত : ০০:৪৫, ১৪ এপ্রিল ২০২৩ | আপডেট: ১৮:০১, ১৪ এপ্রিল ২০২৩
পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে একুশ শতকের উষালগ্নে যাত্রা একুশে টেলিভিশনের। পথচলার দুই যুগে পদার্পণ উপলক্ষে একুশে-ভবনে উৎসবের আলোকছটায়, বৈশাখী আবাহনে একাত্ম হোন রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সামাজিক, সাংস্কৃতিক অংঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা।
ঘড়ির কাটা ১২টা স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গেই একুশে’র প্রধান নির্বাহী কর্মকতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় আগত অতিথিদের নিয়ে কেক কাটেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানের এই শুভক্ষণের উদ্ধোধন করেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। এসময় তার সঙ্গে আরও ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।
এছাড়া একুশে টেলিভিশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী, সম্প্রচার ও প্রকৌশল বিভাগের মহাব্যবস্থাপক সুজন দেবনাথ, মানব সম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মেজর (অব.) মোহাম্মদ নাসিম হোসেন, অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান সাইফ আইমেদ, সিনিয়র বিজনেস এডিটর আতিয়ার রহমান সবুজ, এ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাশেদ আলী, নির্বাহী প্রযোজক মোস্তাকিম স্বাধীন,বাণিজ্য বিভাগের প্রধান ফেরদৌস নাঈম পরাগ, বিশেষ প্রতিনিধি আতিকুর রহমান পূর্ণিয়া, যুগ্ন বার্তা সম্পাদক মুশফিকা নাজনীন, বুলবুল চৌধুরী, নিউজরুম এডিটর মাসুমা লিসা, সমর ইসলাম, মানিক শিকদার, সিনিয়র রিপোর্টার ফারজানা শোভা, দীপু শিকদারসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর গণমানুষের মুখপাত্র হিসেবে একুশে তার আপন আলোয় পথ চলবে,পরিবর্তনের জয়যাত্রায় এগিয়ে যাবে একুশে- এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আগত অতিথিরা।
জন্মদিনের এই শুভক্ষণকে স্মরণ করে একুশে টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও প্রধান নির্বাহী পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়।
একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকতা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাঙ্গালি সংস্কৃতির বিকাশ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে একুশে টেলিভিশন কাজ করে যাচ্ছে।
পথচলার দীর্ঘ ২৩ বছরে সাথে থাকার জন্য সকল দর্শক, বিজ্ঞাপনদাতা, ক্যাবল অপারেটরসহ শুভানুধ্যায়ীদের ধন্যবাদ জানায় একুশে পরিবার।
একুশ মানে মাথা নত না করা। মুক্তচিন্তার জানালা খুলে পরিবর্তনের প্রত্যয় নিয়ে, দেশের সংবাদ-তথ্য ও বিনোদন ভুবনে নতুন দিগন্তের উন্মেষ ঘটাতে ২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্য দিয়ে যাত্রা একুশে টেলিভিশনের।
পরিবর্তনের যে অঙ্গিকার নিয়ে একঝাঁক তরুণ সংবাদকর্মী ও নির্মাতাদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করেছিল বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিয়াল টিভি চ্যানেল একুশে টেলিভিশন। লক্ষ্য ছিল বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযেুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দেয়া।
বস্তুনিষ্ট ও চমকপ্রদ সংবাদ আর দেশজ ব্যতিক্রমী বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে বিশ্বের বুকে সঠিকভাবে তুলে ধরতেই একুশে হয়ে উঠে বাংলাদেশের জানালা।
প্রতিষ্ঠার ২৮ মাসেই একুশে টেলিভিশন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, বৈচিত্রময় অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য্য ছড়িয়ে জয় করে কোটি মানুষের মন। মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বলিষ্ঠ দাবি, ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল একুশে।
বাঙ্গালী সংস্কৃতির প্রতিকী ক্ষণ পহেলা বৈশাখে আত্মপ্রকাশ। নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে একুশের দীর্ঘ পথচলা। কিন্তু এই পথচলা সহজ ছিল না। বাঁধা এসেছে বারবারই।
২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি-জামাত জোট সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয় একুশে। আইনী জটিলতার অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় দর্শকপ্রিয় চ্যানেলটি।
২০০৫ সালে আদালতে একুশে টেলিভিশন সম্প্রচারের বৈধতা দেয়। বন্ধ করতে যতটা তাড়াহুড়া, খুলে দিতে ততোটাই টালবাহানা। শেষ পর্যন্ত ২০০৭ সালে আবারো সম্প্রচারে আসার পর থেকে নানা ঘাত প্রতিঘাত পার করে ২৪-এ পা রাখলো গৌরবের একুশে টিভি।
নতুন দ্বার খুলে, নতুন সূর্যের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে শুরু হয় একুশে টেলিভিশনের নতুন পথচলা। এরপর আর পেছনে তাকানো নয়, নির্ভিক সংবাদ আর বিনোদনের ডালি নিয়ে শুধুই সামনে এগিয়ে চলা।